লাগলেও হয়তো বিষয়টা খুবই সহজ হবে। আমাদের ভেতর যে প্রতিযোগিতা, অসমতা, ঘৃণা ও ভেদাভেদের জায়গাগুলো আছে সেগুলো আর থাকবে না।পরবর্তী প্রজন্মের জন্য হিংসা-বিদ্বেষ, অসমতা, সহিংসতা ও যুদ্ধবিহীন একটি বিশ্ব আমাদের রেখে যাওয়া প্রয়োজন, যেন তারা একটি স্থিতিশীল পরিবেশে বসবাস করতে পারে, নিজেদেরকে বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে পারে এবং এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারে।শান্তি ও স্থিতিশীলতা যতটা না আর্থিক, ধার্মিক ও জাতীয় বিষয়; তার থেকে অনেকাংশেই এটা নির্ভর করে মানুষের মানসিকতা, চিন্তাশীলতা, সহনশীলতা, ধৈর্যশীলতা ইত্যাদির উপর। আমরা যদি মানসিকভাবে স্থির চিন্তার অধিকারী হই তাহলে দারিদ্র্য কোনো বিষয়ই নয়। কেবল ইতিবাচক চিন্তাশীলতার মাধ্যমেই ৯০% সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, আর বাকি ১০% অর্থনৈতিক সমস্যা আমাদের ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের মাধ্যমে সমাধান হবে।রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধের কারণ হলো উগ্র জাতীয়তাবাদ। আর এর কারণেই ইউক্রেন রাশিয়ার উপর থেকে আস্থা হারিয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে ন্যাটোর প্রতি ঝুঁকে পড়েছে। অথচ এই দুটি দেশ ৭০ বছর একসঙ্গে থেকেছে। ১৯৯১ সালে বিভাজনের পর থেকেই তাদের মাঝে উগ্র জাতীয়তাবাদের কারণে দুটি দেশের মাঝে অস্থিরতার বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করে এবং একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখতে শুরু করে। তাদের এই উগ্র জাতীয়তাবাদ আজ এমন একটি পর্যায়ে গিয়ে দাঁড়িয়েছে, যা যুদ্ধে পরিণত হয়েছে। এতে জান এবং মাল উভয়ের ক্ষতিসাধন হচ্ছে।১৯৪৭-এ ভারতীয় উপমহাদেশের বিভাজন ধর্মীয় উগ্রবাদ এর কারণে, এত বছর পরেও বিভাজিত দেশগুলোর মাঝে দূরত্ব শুধু বাড়ছেই। ঠিক তেমনি ৩০ বছর পেরিয়ে গেলেও রাশিয়া এবং ইউক্রেনের দূরত্ব বেড়েই চলেছে।
আমাদের মাঝে শুধু যদি এই চিন্তাধারাটি আসে- আমরা সবাই মানুষ সবার শান্তিতে বাঁচার এবং বসবাসের অধিকার রয়েছে; তাহলে এসব অস্থিতিশীলতা কমে যাবে। আর এটি যে সম্ভব এটা বাস্তব উদাহরণ আমাদের সামনে রয়েছে। ইউরোপের অনেক দেশ মিলেমিশে সমাজ ও দেশ পরিচালনা করছে। আমরা এমন একটি ইতিবাচক উদাহরণ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে শান্তিপ্রিয় বিশ্ব গড়ে তোলার কাজ করতে পারি।ধর্ম পরিচয় বা জাতীয়তার পরিচয় কি এতই গুরুত্বপূর্ণ যে, এই পরিচয়ের কারণে আমরা একে অপরের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত হব? একে অপরের প্রতি অত্যাচার অবিচার বা হত্যা করব? আমাদের মমতা কোথায়? আমাদের মনুষ্যত্ব কোথায়? আমরা যে সবাই মানুষ এটা কি ভুলে যাচ্ছি? আমার এ প্রশ্ন সবার কাছে।