উপমহাদেশের ধর্মীয় উস্কানি বাড়ছে কেন?

ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষের সবচাইতে বড় পরিচয় ধর্মীয় পরিচয়। কেউ ভারতীয় বাংলাদেশি পাকিস্তানি হওয়ার আগে তাদের অবশ্যই আগে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান হতে হবে, সেটা আমাদের ব্রিটিশরা খুব ভালো হবে শিখিয়ে গেছে। ব্রিটিশরা আমাদের শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত করে গেছে। ব্রিটিশরা মূলত আমাদেরকে ইংরেজি শিক্ষা থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছিল। কেননা তারা আমেরিকা থেকে ভাল করে শিক্ষা গ্রহণ করেছে আমেরিকানরা শুধুমাত্র ইংলিশ ভাষা শিখে তাদের প্যাদানি দিয়েছে। আমেরিকানরা শিক্ষা গ্রহণ করেছে নিজেদের পরিবর্তন করেছে বিপ্লবী চিন্তা-চেতনা তাদের মধ্যে নিয়ে এসেছিল।উপমহাদেশের মানুষ ধর্মকে সবকিছু মনে করে। ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ হল, ধর্মের কারণে অনেক রাজনৈতিক দল আছে, ধর্মের কারণে অনেক রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় এসেছে। দেশভাগের সময় মন্দির ভেঙে মসজিদ হয়েছে মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির হয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশে মানুষের অর্জন বলতে গেলে খুবই সামান্য। যারা কিছু অর্জন করতে পারেন তারা ধর্ম নিয়ে টানাটানি পেচাপেচি করেন না। আর যারা কিছু অর্জন করতে পারে না তারাই ধর্ম নিয়ে দলে বিভক্ত হন। নিজে যেহেতু আইনস্টাইন কিংবা হোমি ভাবা নন তাহলে তার পরিচয় ধর্ম টাই বেশি প্রাধান্য পাবে। এই অঞ্চলের মানুষ প্রতিযোগিতা বেশি পছন্দ করে। তখন শুরু হয়ে যায় আমার ধর্ম ভালো না তোমার ধর্ম ভালো? তখনই মূলতঃ উস্কানি সূত্রপাত। যারা ধর্ম নিয়ে ফায়দা লুটতে চান তারাই ধর্ম নিয়ে উস্কানি দেন। ধর্ম নিয়া উস্কানি দিয়ে মানুষের মাঝে কলহ জঙ্গী জিহাদ সৃষ্টি করেন। বর্তমানে এটা বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ “আমি বড় তুমি ছোট” এই ধরনের চিন্তাভাবনা থাকার কারণে। ধর্মীয় উস্কানি দিলে সাথে সাথে মানুষ একসঙ্গে চলে যায় এই সুযোগে স্বার্থন্বেষী মহল ফায়দা লুটে। বর্তমানে ভারত বাংলাদেশ যদি কখনো দাঙ্গা লাগানোর প্রয়োজন হয় আমেরিকানদের কখনোই আসতে হবেনা। আমেরিকা শুধুমাত্র সেখান থেকে বসে ফেসবুকের পোস্ট করবে ব্যাস আমরা এখানে দাঙ্গা লাগবো। কি যে মজা হবে।সাম্প্রদায়িকতার পেছনে মূল কারণ রাজনীতি। ধর্মকে হাতিয়ার বানিয়ে রাজনীতি করা উপমহাদেশে মুসলিম লীগ প্রথম শুরু করেছিল সেটা আজ অব্দি চলছে। ধর্মের দোহাই দিয়ে ভোট পাওয়া যাবে। ভালো কাজ না করলেও ধর্মের বাণী শুনিয়ে বারবার ভোট পাওয়া যাবে। এর থেকে মজার আর কিছুই আছে। মানুষ যখন ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করে তখন দাঙ্গা লাগানো মানুষকে এক পক্ষ অন্য পক্ষের ওপর অসন্তুষ্ট রাখা অনেক সহজ। “ডিভাইড এন্ড রুল” কার্যকর করার সবচেয়ে বড় উদাহরণ এই সাম্প্রদায়িকতা। পুরোহিত শ্রেণীর মানুষের কাছে ধর্ম হাইজ্যাক হয়ে যাওয়া এবং তারা রাজনীতিতে এসে ভুলভাল বকে মানুষকে বোকা বানিয়ে ভোটে জেতা এবং দুর্নীতি করে এই উপমহাদেশ থেকে পালানো। এটি একটি জনসংস্কৃতি হয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি বন্ধ হলে অনেক দাঙ্গা-হাঙ্গামা কমে যাবে বলে আমি মনে করি।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *