পৃথিবীর বুকে দু’টি জমজমাট ব্যবসা- ‘ধর্মব্যবসা ও অস্ত্রব্যবসা’

বর্তমান বস্তুবাদী পশ্চিমা সভ্যতার অনুগত পৃথিবীতে জমজমাট কয়েকটি ব্যবসার তালিকা কোরলে সর্বাগ্রে স্থান পাবে ধর্মব্যবসা ও অস্ত্রব্যবসা। রমরমা এ ব্যবসা দু’টির ফাঁদ থেকে কেউই মুক্ত নয়। পৃথিবীতে প্রচলিত সব কয়টি ধর্মেরই এমন পুরোহিত-যাজক শ্রেণি রোয়েছে যারা অর্থের বিনিময়ে ধর্মের কার্যাদি সম্পন্ন কোরে থাকে। কেউবা রাজনীতির অঙ্গনে ধর্মকে ঢালসরূপ ব্যবহার করে। এটাই ধর্মব্যবসা। অন্যদিকে অস্ত্রব্যবসার সরল-শাব্দিক অর্থ ছাড়াও আরও একটি প্রায়োগিক অর্থ আছে। সেটা হোল আগে অস্ত্রের চাহিদা সৃষ্টি করা, অতঃপর অস্ত্র উৎপাদন ও বিক্রি করা। বিশ্বব্যাপী চলমান অস্ত্রব্যবসার মহাজন হোচ্ছে বিশ্বমোড়ল যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন, ব্রিটেন, ফ্রান্সসহ কথিত সব উন্নত সুপার পাওয়াররা। আর খাতকের ভূমিকা পালন কোরছে উন্নয়নশীল, অনুন্নত তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলো। অবশ্য স্বল্পন্নোত দেশগুলোও এ ব্যবসার দ্বারা কম নিপীড়িত হোচ্ছে না। তারাও বিশ্ব অস্ত্রশক্তির তালিকায় নিজেদের অবস্থান ধরে রাখার জন্য কোটি কোটি ডলারের অস্ত্র মজুদ করতে গিয়ে ফতুর হোচ্ছে। 

প্রথমেই আসি ধর্মব্যবসার প্রসঙ্গে। ধর্মকে পার্থিব স্বার্থে ব্যবহার করা একটি সুস্পষ্ট প্রতারণা। এ প্রতারণার করালগ্রাস থেকে মুক্ত নয় আজকের কোনো ধর্মের মানুষই। হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, এসলাম ইত্যাদি পৃথিবীতে আজ যত ধর্ম প্রচলিত আছে তার সবই এখন ধর্মব্যবসায়ীদের হাতে কুক্ষিগত। কেউ ধর্মের ধ্বজাধরে ধর্মীয় পুস্তকাদির মুখস্ত বিদ্যা আউড়িয়ে অর্থ উপার্জন কোরছে, আবার কেউ ধর্মকে বানাচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের অন্যতম হাতিয়ার। এ সবগুলোই কার্যত ধর্মব্যবসা, যার নিষেধাজ্ঞা প্রতিটি ধর্মগ্রন্থেই মিলে। কিন্তু সে ধর্মগ্রন্থগুলোও তো ঐ ধর্মব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের জালে আবদ্ধ। কাজেই ধর্মব্যবসায়ীদের নিকৃষ্ট এই কর্ম সম্পর্কে আজকের দুনিয়ার অধিকাংশ ধর্মভীরু ব্যক্তিই অনবহিত। তারা ধর্মব্যবসায়ী মোল্লা-পুরুত ও রাজনীতিকদেরকে ধর্মের হর্তকর্তা ভেবে কার্যত প্রতারণার পালে হাওয়া দিয়ে যাচ্ছে। আর সে হাওয়ায় ফুলে ফেঁপে উঠছে ধর্মব্যবসায়ী প্রতারকরা। পৃথিবীর প্রতিটি দেশে দেশে ধর্মব্যবসায়ীদের জ্বালানো আগুনে দগ্ধ হোচ্ছে অসংখ্য নিপীড়িত অসহায় আদম সন্তান। বিশেষ করে মোসলেম দেশগুলোতে এর ভয়াবহতা সীমা অতিক্রম কোরেছে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় হোল এদের অপকর্ম দ্বারা সাধারণ মানুষ যতই নিপীড়িত হোক না কেন, প্রতারক ধর্মব্যবসায়ী মহাজনরা কিন্তু স্বল্প দিনের ব্যবসাতেই নাম কামিয়ে ফেলেন। তারা সমাজে পরিচিত হন মাওলানা, আলেম, ওলামা, মোফাসসের, পীর, কামেল, ওলি ইত্যাদি হিসেবে।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *