ধর্মীয় গোঁড়ামি বা ধর্মান্ধতা বা কট্টরপন্থা হচ্ছে, রক্ষণশীল শক্তি পক্ষান্তরে উন্নয়ন অর্থাৎ মানুষের সামগ্রিক উন্নয়ন বা মানব সভ্যতার বিকাশ এবং অগ্রগমন হচ্ছে প্রগতিশীল শক্তি। তো,রক্ষণশীলতা এবং প্রগতিশীলতা হচ্ছে চিরন্তন দ্বান্দ্বিক বা বিরুদ্ধ শক্তি। প্রসঙ্গক্রমে নিউটনের প্রথম গতি-শক্তি স্মরণ করি।” বাইরে থেকে বল প্রয়োগ না-করলে,অচল বা স্থির-বস্তু চিরকাল অচল বা স্থির থাকবে এবং সচল বস্তু চিরকাল সমবেগে, সরলরৈখিক পথে চলতে থাকবে।” তাহলে? বস্ত বা মানুষের উন্নয়ন নির্ভর করে,শক্তির ভিত্তিতে সুতরাং রক্ষণশীল শক্তি, মানুষের উন্নয়নের পরিপন্থী। রক্ষণশীল ভাবনা হচ্ছে, আগেকার সবকিছুই দারুণ সুন্দর বা এককথায় রাম-রাজত্ব ছিলো সুতরাং সবার কর্তব্য, ধর্মীয় বিধিনিষেধ মেনে, জীবনযাপন করা কর্তব্য। প্রগতিশীল ভাবনা হচ্ছে, সময়োপযোগী এবং যুগোপযোগী হতে হবে। মূল বিচার্য, হারাম/হালাল নয়,কঠিন এবং কঠোর বাস্তবতা-বোধ।
এ প্রসঙ্গে, ধর্মান্ধতা বা ধর্মীয় গোঁড়ামি কি বুঝতে হলে, আগে জানতে হবে, ধর্ম কি? ধর্ম হচ্ছে যা ধারন করে রাখে এবং যে বিষয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন, স্বচ্ছ যুক্তি-যুক্ত ধারনা করা যায় তা হচ্ছে ধর্ম। সুতরাং ধর্ম উপলব্ধির বিষয়, অনুভবের বিষয় এবং স্বতঃস্ফূর্ত অন্তর্নিহিত ইতিবাচক শক্তি। ধর্ম বড়াই করার বা অহংকারের বিষয় নয় যে আমার ধর্মই শ্রেষ্ঠ-ধর্ম এবং অন্য বা ভিন্ন-ধর্ম, কম প্রাসঙ্গিক এবং অযোগ্য। ধর্মের সারবস্তু থাকে, বীজের কেন্দ্রে, ধর্মীয় বৃত্তের কেন্দ্র-বিন্দু হচ্ছে মূল-ধর্ম। ধর্ম-বৃত্তের ব্যাস এবং বৃত্তের পরিধি হচ্ছে, বারফট্টাই, হামবড়াই আর ঘোরালে-লাঠি, ফেরালে-বাঁশ,বেহায়া- বেলাল্লাপনা। ধর্মান্ধতা বা ধর্মীয় গোঁড়ামি, মানব উন্নয়নের গতি-রোধ করে, নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ধর্মের ফ্যাচাং-কলে পড়ে, সাধারণ মানুষ ফ্যাসাদে পড়ে, হাসফাস করে কিন্তু উত্তরণের পথ খুঁজে পায় না।
ধর্মের ব্যবসায়ীক রূপ হচ্ছে, ধর্মান্ধতা এবং গোড়ামি।