ধর্মান্ধতার কবলে নিমজ্জিত সমাজ: চিকিৎসার অভাবে জীবন গেলো মা ও নবজাতকের

হিযবুত তাওহীদ ও দেওয়াবাগীদের ধর্মান্ধতা আর রমরমা ধর্মব্যবসায় যেভাবে প্রাণ গেলো মা ও নবজাতকের:

আমাদের এলাকার মেয়ে চুমকি ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু হিযবুত তাওহীদ আর দেওয়ানবাগীদের ফতোয়ার ফলে চুমকির স্বামী তাকে কোনদিন ডাক্তারের কাছে নেয়নি। এমনকি পুরো প্রাগন্যান্সিতে সে নানান অসুখে ভুগলেও ডাক্তারের কাছে না নিয়ে বরং পানি পড়া ঝাড়ফুকের দারস্থ হয় তকর স্বামী। এসবের একমাত্র কারন তার স্বামীর পীর ভক্তি। যা তাকে পুরোপুরি অন্ধ করে দিয়েছে। হঠাৎ করে চুমকির ৯ মাসের সময়ে প্রসব বেদনা শুরু হয়। গ্রাম্য দাত্রীকে ডেকে আনা হয়। কিন্তু প্রথম থেকেই তো চুমকি চিকিৎসকের কাছে একবারো যায়নি। বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগলেও শেষ সময়ে তার জীবনে যে এমন সময় আসবে কে কল্পনা করেছিলো?গ্রাম্য দাত্রী অনেক চেষ্টা করলেও সন্তান প্রসব করাতে ব্যর্থ হয়। সবাই চুমকিকে হাসপাতালে নেয়ার জন্য বললেও তার স্বামী দেওয়ানবাগী পীরের মুরিদ হওয়ায় তার ফতোয়া অনুযায়ী কোনভাবেই হাসপাতালে নিতে রাজি হয়না। এমন অবস্থায় চুমকির ও তার গর্ভের শিশুর জীবন ঝুকিতে পড়ে যায়। কিন্তু তার স্বামীর এক রোখা জেদ সে হিযবুত তাওহীদ নেতার ফতোয়া অনুযায়ী চলতে থাকে প্রয়োজনে তার সন্তান মারা গেলেও সেটাতেও তার ভ্রক্ষেপ নেই। হাসপাতালে পুরুষ ডাক্তার যদি তার স্ত্রীকে দেখে তাতে নাকি তার ইমান ভঙ্গ হবে। যাইহোক এভাবে চলতে চলতে সন্ধ্যা নাগাদ তার প্রসূতি স্ত্রীর অবস্থা অবনতি হতে থাকে। অতঃপর তার মৃত্যু হয়।এ ঘটনার পর আমি একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে চুপ করে থাকতে পারিনি। পরেরদিনই নিজে বাদী হয়ে থানায় যাই হিজবুত তাওহীদ ও দেওয়ানবাগিদের বিরুদ্ধে মামলা করতে। কিন্তু থানার কর্তব্যরত ইনচার্জ বলে দেয় যে আমার মামলা তারা নিবে না বরংচ ভুক্তভোগীর স্বামীকে আসতে। এবং আমাকে বেশি বাড়াবাড়ি না করজর জন্য হুমকি দেয়।

দেওয়ানবাগীর পীরমুরিদের ভয়ংকর কারসাজি–

কুসংস্কার আর ভন্ডামির আরেক কুরুক্ষেত্র এই দেওয়ানবাগীর ভন্ড পীর আর তার মুরিদগন। বাংলাতেশের প্রত্যন্ত গ্রামে গঞ্জ থেকে শুরু করে এহেন কোন জায়গা নাই যেখানে তারা সরল সোজা। মানুষদের আটকানোর জন্য টোপ ফেলে নাই। গ্রামের সরল সোজা মানুষদের ইসলামের নাম নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানোই তাদের মুল টার্গেট। এই দেওয়ানবাগীরা সারা দেশে বিভিন্ন অবান্তর সব তথ্য ছড়িয়ে ধর্মকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে যেমন- নারীদের ১২-১৪ বছরের ভেতর বিয়ে দিতে হবে। ঘরের বাইরে নারীদের বের হতে দেয়া যাবেনা। কোন নারী কোন পুরুষ ডাক্তার দ্বারা চিকিৎসা নিতে পারবেনা। ইত্যাদি আরো অনেক আজগুবি ফতোয়া জারি করে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে দেওয়ানবাগি পীর আর তার মুরিদেরা। তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে আওয়ামিলীগের কিছু শীর্ষস্থানীয় নেতা যারা দেওয়ানবাহীদের কথায় মজে পুরোপুরি তাদের কন্ট্রোলে। আর দেওয়ানবাগী পীর এটারই সুযোগ লুফে নিয়ে সরকারি ক্ষমতাকে কাজো লাগিয়ে ক্ষমতা প্রয়োগ করে মানুষকে আরো বেশি করে বিভ্রান্ত করে সমাজকে কন্ট্রোল করার জন্য আজগুবিসব ফতোয়া জারি করছে। এসব আজেবাজে ফতোয়া শুনে কোন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ ন্থীর থাকতে পারেনা।একইভাবে হিজবুত তাওহিদ র দেওয়ানবাগীদের ভন্ডামিকে মানুষ ধর্মের রীতি ভেবে আগলে নিচ্ছে। যা সমাজে ছড়াচ্ছে মারাত্মক বিপর্যয়। সমাজে নারী বিদ্বেষকে উস্কে দিচ্ছে তারা। নারীরা হয়ে পড়ছে অসহায়। এমন অবস্থায় নিজের বিবেকের কাছে জবাব দিতে পারছিলাম না আমি। একজন শিক্ষিত সচেতন নাগরিক হিসেবে চুপ করে মানুষের মৃত্যু হাহাকার বিপর্যয় এসব বসে বসে দেখা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই নিজের বিবেকের তাড়নায় তাদেরকে নিয়ে না লিখে আর পারলাম না। তাদের এ চেহারা জনগনের কাছে প্রকাশ করা জরুরী মনে করেছি।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *